আম এমনই এক সুস্বাদু ফল, যার জনপ্রিয়তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি আম উৎপন্ন হয় ভারতে এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গ বিশেষ করে রাজশাহী চাপাইনবয়াবগঞ্জ-এর আমের জুড়ি নেই।
গরম পানিতে আম শোধন |
ইতোমধ্যে ২৭ জানুয়ারী ২০১৯ প্রথম এবং তৃতীয় জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায় চাপাইনবয়াবগঞ্জ-এর ক্ষীরসাপাতি বা হীমসাগর আম। আবার সাম্প্রতিক দেশের ১১তম জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে রাজশাহী চাপাইনবয়াবগঞ্জ এর ফজলি আম। তাই বুঝাই যাচ্ছে বাংলাদেশের আম সারা বিশ্বের নজর কাড়তে পেরেছে খুব সহজেই।
চলছে আমের মৌসুম। এই মৌসুমে দেশের আনাছে-কানাছে আমের ছড়াছড়ি। এমন পাকা টসটসে মিষ্টি আমা খেতে কার না ভাল লাগে? কিন্তু প্রব্লেম হচ্ছে সবার বাড়িতে তো আর হিমাগার থাকে না বা চাইলেও সবাই হিমাগার ম্যানেজ করতে পারে না। আরো ভয়ানক সমস্যা পাকা আম ফ্রিজে রাখা যায় না৷ তাতে আমের রঙ যেমন কালছে হয়ে যায়, তেমনি আমের স্বাদ গন্ধও নষ্ট হয়ে যায়। এমতাবস্থায় আজ আমরা আম সংরক্ষণের এমন এক পদ্ধতি নিয়ে কথা বলব, যে পদ্ধতি অবলম্বন করে ঘরোয়া পদ্ধতিতে অনায়েসেই পাকা সংরক্ষণ করা যায় দিনের পর দিন। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এটি বৈজ্ঞানিকভাবে পরিক্ষিত এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।
এই পদ্ধতির বিশেষত্ব হলো এর জন্য আপনাকে কোনরকম বেগ পেতে হবে না। একদমই সংশ্রয়ী। ফলে খুব একটা ঝক্কিঝামেলা পোহানর দরকার নেই। কোন রকম ঝামেলাহীনভাবে ঘরে বসেই আপনি এটি প্রয়োগ করতে পারেন। শুধু জানতে একটা গোপন টিপস।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কি কি লাগবে। এর জন্য আপনাকে ৪ টি জিনিস ব্যাবহার করতে হবে-
১/ নরমাল পানি
২/ ওয়াটার থার্মোমিটার
৩/ পাত্র
৪/ একটি শুকনো পরিষ্কার কাপড় ইত্যাদি।
তো চলুন গোপন টিপ্সটি জেনে নেই।
*এরজন্য প্রথমেই আপনাকে একটি পরিষ্কার পাত্রে পরিমাণমত বিশুদ্ধ পানি নিতে হবে।
* পানিকে অল্প আচে গরন করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত গরম না হয়। এতে আম সিদ্ধ হয়ে যেতে পারে। এবং আমের কালার ও স্বাদ নষ্ট হয়ে যাবে।
* থার্মোমিটার দিয়ে পানির তাপমাত্রা নিশ্চিত করুন। মনে রাখবেন এই পদ্ধতিতে ৫০-৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার দরকার হয়। তাই কমবেশি হলে ফলাফল ভিন্ন হতে পারে। যদি কোন কারনে পানি অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়, তবে সেই গরম পানিতে আম না চুবিয়ে অপেক্ষা করুন। যখন টার্গেট তাপমাত্রা পাওয়া যাবে তখনি শুরু করতে হবে।
* এবার গরম পানিতে আলতো করে আম গুলো ছেড়ে দিন। খেয়াল রাখবেন যেন সম্পূর্ণ আম পানিতে ডুবে থাকে।
* এবার আপনাকে ৭/৮ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।
* ৭/৮ মিনিট চুবিয়ে রাখার পর আমগুলো তুলে নিন এবং পরিষ্কার শুকনো কাপড় দিয়ে ভাল করে মুছে শুষ্ক- ঠান্ডা স্থানে (যেখানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস আছে) রেখে দিন।
ব্যাস, আপনার কাজ শেষ।।।
শেষে বলে রাখি কেন এইভাবে আম ভাল থাকে বা কেন আপনি এটি প্রয়োগ করবেন?
আর আমরা সবাই জানি আমসহ যেকোনো ফলের পচন শুরু হয় ফলের বোটা থেকে। আবার যেকোনো জিনিস পচার জন্য ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক দ্বায়ী। এই আম যখন গাছে থাকে তখন গাছের এন্টইজেন-এন্টবডির কারণে ঔ ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক আমের কোন পচন ঘটাতে পারে না। যদি না অন্যকোনভাবে আম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্ত পাকা আম যখন ঘরে বা ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয় তখন ঐসব অনুজীবগুলো সক্রিয় হিয়ে ওঠে এবং আমের পচন ঘটায়।
তো যখন উপরের উল্লেখিত নিয়ম অনুসারে হীট ট্রিটমেন্ট করা হয়, তখন সকল ধরনের অনুজীব ধ্বংস হয়ে যায় এবং আম তার স্বাদে গুণে ফ্রেশ থাকে।
আশা করি আপনারা এটি প্রয়োগ করবেন।
<<<<<<ধন্যবাদ>>>>
আরও পড়ুন-
কোন আম কিভাবে চিনব | বাজারে ঠকতে না চাইলে দেখে নেন।
পাকা আম সংরক্ষনের ঘরোয়া পদ্ধতি | How to Preserve Ripe Mango...,mango preservation,আম পাকার সময় ২০২২,আম গাছের পরিচর্যা,পাকা আমের উপকারিতা,পাকা আমের গুণাগুণ,পাকা আমে কোন এসিড থাকে,পাকা আমের ছবি,পাকা আম in english,পাকা আমে কি কি উপাদান থাকে,পাকা আমে কোন ভিটামিন থাকে,পাকা আমের ক্ষতিকর দিক,পাকা আম চেনার কৌশল,paka aam sapnsa dekhna,হিম সাগর আম,আম্রুপালি আম,হাড়ি ভাঙ্গা আম,গোপাল্ভোগ আম,লেংরা আম,সূর্যডিম আম,surjadim aam,banana mango,notun jater aam,fresh am