বর্তমানে ছোট থেকে বড় সবার হাতেই মোবাইল ফোন রয়েছে। মোবাইল ফোনের প্রতি আমরা এতটাই আসক্ত হয়ে পড়ছি যে, এক মুহুর্তও মোবাইল ফোন ছাড়া নিজেদের ভাবতে পারি না। নাওয়া-খাওয়া থেকে শুরু করে মসজিদ মন্দির পর্যন্ত দখল করে বসে আছে আপনার আমার হাতে থাকা স্মাiর্টফোনটি। যদি প্রশ্ন করা হয়, সকালে ঘুম ভাঙ্গার পর প্রথমেই আপনি কি করেন? নিশ্চয়ই বলবেন মোবাইল হাতে নেন। আবার যদি প্রশ্ন করা হয়, দিন শেষে রাতে যখন ঘুমাতে যান তখন সসর্বশেষ কোন কাজটি করেন, ঠিক ঘুমানোর আগ মুহুর্তে?? আপনি হয়তো বলবেন মোবাইল। সারাদিনের কথা নাই বা বললাম।
চার্জিং ফোন |
মোবাইল ফোন |
আমেরিকান বিজ্ঞানী মার্টিন কুপার যেদিন দেড় কেজি ওজনের মোবাইল আবিস্কার করেছিলেন, সেদিন ক'জন ভেবেছিল যে তার এই আবিষ্কার এতদূর গড়াবে? আজ পৃথিবীর আনাচে-কানাচে তা এতটাই জনপ্রিয় হয়েছে, পৃথিবীর ৯০% এর অধিক মানুষ এই যন্ত্রটা ব্যাবহার করছে। দিন দিন তা বেড়েই চলছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে বাংলাদেশে প্রায় ১৬ কোটির অধিক মোবাইল ফোন গ্রাহক রয়েছে। এবং এই হার ক্রমবর্ধমান।
যা জানা জরুরি
সখের বশে হোক কিংবা প্রয়োজনের তাগিদে হোক যখন মোবাইল ফোন না স্মার্টফোন কিনেই ফেলেছেন, তখন আপনাকে কিছু জিনিস জানতেই হবে। যদি আপনি চান যে, এই ফোনটিকে আরামে স্বাচ্ছন্দ্যে দীর্ঘদিন চালাতে তাহলে এই ব্যাপারগুলো না জেনে তা কোনভাবেই সম্ভব না। যেমনঃ আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আপনি যে ফোনটি চালাচ্ছেন সেটির র্যাম কত, রম কত, ব্যাটারি কত মিলি এম্পিয়ার, চার্জিং ক্যাপাসিটি বা চার্জার ক্যাপাসিটি কেমন এবং তার সাথে চার্জ ব্যাক আপ। কেননা এসবের উপর নির্ভর করে আপনার ফোনের আয়ুস্কাল এবং কর্মদক্ষতা।
মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার সঠিক নিয়ম
আমরা হয়তো জানিনা মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার সঠিক নিয়ম কি কিংবা জানার মতো সময় সুযোগেও হয়ে ওঠে না। কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি। এই বেখেয়ালির জন্য কতটুকু ক্ষতির শিকার হচ্ছে হাতে থাকা স্মার্টফোন ডিভাইসটি? যাইহোক আজ আমরা এ ব্যাপারে সংক্ষেপে জানার চেষ্টা করব।
আইটি স্পেশালিষ্ট ও মোবাইল ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ভাষ্যমতে সঠিকভাবে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার দুটি সিস্টেম রয়েছে।
একঃ এই পদ্ধতি অনুসরণ করা তুলনামূলক সহজ। এই পদ্ধতিতে -
- কখনোই ২০% এর নিচে আনা উচিত না।
- ব্যাটারি চার্জ ৫০% এর নিচে অর্থাৎ ২০% থেকে ৫০% এর মধ্যে থাকাকালীন চার্জ দিতে হবে।
- চার্জ দেওয়া কালীন ৯৫% থেকে ৯৮% হলে চার্জার থেকে ফোনটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
- কিন্তু সপ্তাহে অন্তত দুই দিন চার্জ ১% এ নামিয়ে এনে ফুল চার্জ তথা ১০০% চার্জ করাতে হবে এতে ব্যাটারির স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়।
দুইঃ এই পদ্ধতি মেনে চলা একটু কঠিন হলেও ব্যাটারি ব্যাকআপ দীর্ঘমেয়াদী হয়। এই পদ্ধতিতে -
- প্রতিবার ১% থেকে ৫% এর মধ্যে এলে চার্জার সংযোগ করতে হবে।
- চার্জ ১০০% হলেই কেবল চার্জার সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
সতর্কবার্তা
ফোন চার্জের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হয়। যেমনঃ
- উল্টা-পাল্টা চার্জার দিয়ে ফোন চার্জ দিবেন না। ফোনের সাথে থাকা চার্জারটি যত্ন করে ব্যাবহার করুন। একি চার্জার সবসময় ব্যাবহার করার চেষ্টা করুন।
- ফোনে চার্জ দেওয়া অবস্থায় ফোনে কথা বলা বা ফোন ব্যাবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
- অপ্রয়োজনীয় বিল্ট-ইন সফটওয়্যার আন - ইন্সটল করুন।
- অনেক ভারী সফটওয়্যার বা গেইমিং সফটওয়্যার ব্যাবহার করা থেকে সাবধান থাকুন।
- ভোল্টেজ ⚡ উঠানামা বা লো ভোল্টেজ- ফোন বা ইলেকট্রনিকস ডিভাইস চার্জ দেওয়া উচিত না।
- রাতে ঘুমানোর সময় চার্জার কানেক্টেড করবেন না। এতে সারারাত ধরে চার্জার কানেক্টেড থাকায় ব্যাটারি অভারলোডেড হয় এবং লিথিয়াম আয়নের শক্তি হ্রাস পায়। তাই ধীর্ঘ ক্ষণ চার্জার কানেক্টে করে রাখবেন না।