ভয় কি কেবল মনস্ত্বাত্তিক ব্যাপার নাকি শরীরবৃত্তীয় ঘটনা। কেনই বা আমরা ভয় পাই? এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কি? অযথা ভয় পাওয়া থেকে বেঁচে থাকতে কি করণীয়? এসব ব্যাপারে আজ বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। তো চলুন শুরু করা যাক-
অধিকাংশ সময় মানুষ ভয় পেলে 'ফাইট অর ফ্লাইট' থিওরি ফলো করে অর্থাৎ -ভীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়ে সেটা সামলাোর চেষ্টা করে অথবা সে পরিস্থিতির মুখে পালিয়ে বা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
দেখা যায় ভয় পেলে মানুষের হৃদপিণ্ডের গতি বেড়ে যায়, এবং ক্রমেই তা বাড়তে থাকে। কেউ বেশি ভয় পায় কেউবা আবার পরিস্থিতি সাহসের সাথে মোকাবেলা করে।কেউ আবার ঘটনার আকস্মিকতায় চমকে যান, লাফিয়ে ওঠেন। এর কারন কি?
এর প্রধান কারন হচ্ছে যে ধরণের ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে সে সম্পর্কে প্রস্তুতি নেবার মত যথেষ্ট সময় পায়নি আপনার ব্রেইন, কিন্তু আচমকা সে পরিস্থিতির সামনে পড়েছেন আপনি।
আমাদের চিন্তার সাথে আমাদের শরীরবৃত্তীয় কার্যক্রম জড়িত।
এড্রোনালীন হরমোনের একটু বেশী ক্ষরিত হলে এমন হয়ে থাকে কারণ এড্রোনালীন হরমোনকে জরুরীকালীন হরমোন বলা হয়। আপনার সমস্যা ঠিক করার জন্য সর্বপ্রথম মনকে শান্ত করতে হবে এবং মনোবল বাড়াতে হবে। এতে কিছু না হলে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে পারেন
কিছু নির্দিষ্ট ধরনের নিউরন ও এড্রেনাল গ্রন্থি থেকে এই এড্রেনাল হরমোনের উৎপত্তি হইয়ে থাকে।
মানুষ যখন কোনও বিপজ্জনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় বা যখন চাপের মধ্যে থাকে
তখন এই এড্রেনাল হরমোনের উৎপত্তি হয়। নির্দিষ্ট মাত্রায় এই হরমোনটি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গগুলির ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে অ্যাড্রেনালিনের ঘাটতি বা অতিরিক্ত হওয়া স্বাস্থ্যের জন্য
বিপদের কারণ হতে পারে।
অ্যাড্রেনালিন হরমোনকে কখনও কখনও এপিনেফ্রিনও বলা হয়। মূলত অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি এবং মস্তিস্কের কাজের সমন্বয়ে এই হরমোন উৎপাদিত হয়। বিশেষভাবে স্ট্রেস, হতাশাগ্রস্ত, আতঙ্কিত, খুশি বা মানসিক চাপ বা বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে অনুভব করার সময় শরীর এই হরমোনটি ছেড়ে দেয়।
মোদ্দাকথা আমাদের মস্তিস্ক হচ্ছে সকল শরীরবৃত্তীয় কাজের নিয়ন্ত্রক ও ঘটক। মানুষ যখন হঠাৎ করে কোন অসাভাবিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় তখনি মূলত স্য়ংক্রিওভাবে নির্গত এড্রেনালিন হরমোনের প্রভাবে হৃৎপিণ্ডের সহজাত কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়ে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাঁধাগ্রস্ত হয় এবং এক ধরনের কাঁপুনির সৃষ্টি করে। বুক ধড়ফড় কিংবা হাত-পা কাঁপাকাঁপি করা যার বহিঃপ্রকাশ।
তাই
অযথা ভয় পাওয়া থেকে বেঁচে থাকতে-
১/
প্রথমেই নিজেকে বুঝান (উপরের আলোচনা থেকে) যে এটি সম্পূর্ণ্রুপে একটি মনস্তাত্তিক তথা
মস্তিস্কের সয়ংক্রিয় ঘটনা এবং শরীর বৃত্তীয় অস্বাভাবিক বহিঃপ্রকাশ তারই ফসল।
২/
ধীরচিত্তে পরিস্থিতি মোকাবিলা করুন।
৩/
নিজেকে আগেভাগেই প্রস্তুত রাখুন। দেখবেন অহেতুক ভয় পাওয়া থেকে আপনি অনেকটাই মুক্ত।
৪/
আপনার সমস্যা
ঠিক করার
জন্য সর্বপ্রথম
মনকে শান্ত
করতে হবে
এবং মনোবল
বাড়াতে হবে।এতে
কিছু না
হলে আপনি
চিকিৎসকের পরামর্শ
নিতে পারেন।
আপনার
দিনটি নির্ভয়ে কাটুক এই প্রত্যাশায় আজ এখানেই শেষ করছি।
আল্লাহ
হাফেজ…