যাইতুন/ অলিভ/ জলপাই প্রতিদিন ৭ টি। কোরআনের ৭ স্থানে এসেছে
বৈজ্ঞানিক নামঃ Olea europaea |
পবিত্র কালাম আল কোরয়ানে যেসব ফলের উল্লেখ রয়েছে তা নিঃসন্দেহে বরকতময় ও কল্যানকর। মুমিনরা এর ব্যাতিক্রম বিশ্বাস করতে পারে না। পবিত্র কোরয়ানে ৭ জায়গায় যে ফলের নাম এসেছে সেটি হলো যইতুন। কম বেশি সবার কাছেই যইতুন বরকত্ময় ফল হিসেবে পরিচিত।
কোরানের ৯৫তম সূরা সুরা আত্ব-ত্বীন এ আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ত্বীন ও যাইতুন এর সফথ করেন। এছাড়াও
মহাগ্রন্থ আল কোরানের সূরা নাহল এর ১১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ফরমান- ‘আর তিনি এ পানি দ্বারা তোমাদের জন্য উৎপাদন করেন ফসল। জয়তুন খেজুর, আঙুর ও সব ধরনের ফল। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শন রয়েছে। (সূরা : নাহল : ১১)
সূরা মুমিনুন এ ইরশাদ হয় ‘আর এক বৃক্ষ যা সিনাই পাহাড় হতে উদ্গত হয়, যা আহারকারীদের জন্য তেল ও তরকারি উৎপন্ন করে।’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ২০) মোফাসসিরে কেরাম এই বৃক্ষকে যইতুন বলে ঘোষনা করেন।
হাদিসে এসেছে এভাবে- হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, তোমরা জয়তুনের তেল খাও এবং এর দ্বারা মালিশ কর বা শরীরে মাখো। কেননা, তা বরকতময় গাছ থেকে আসে।’ (সহিহ তিরমিজি ১৮৫১, আহমদ, ইবনে মাজাহ্ ৩৩২০ )
যাইতুন এর প্রাধান্য পাওয়া যায়- লেবানন, সিরিয়া, তুরস্ক এর সামুদ্রিক অঞ্চলে, ইরানের উত্তরাঞ্চল তথা কাস্পিয়ান সাগরের দক্ষিণেও ভাল জন্মে থাকে যাইতুন। আবার ভুমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব দিন দিন বহুগুনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জয়তুনকে অনেকেই জলপাই এর সাথে এক করে ফেলে, যদিও এ দুটি সম্পূর্ণ আলাদা ফল। তবে আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশের জল্পাইএর সাথে যথেষ্ট মিল পাওয়া যায়।
তেল ও ফল দুটিই সেবন করা যায়। তবে প্রতিটির জন্য আলাদা আলাদা কাজ ও ব্যাবহার বিধি রয়েছে।
যাইতুন এর উপকারিতা
- রক্তের বাড়তি কোলেস্টেরল দূর করে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
- এতে থাকা প্রচুর ভিটামিন ই লাবণ্য তথা তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।
- এটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ।
- আলঝেইমার বা স্মৃতিভ্রম দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- জটিল ধরনের টিউমার সারাতে সাহায্য করে।
- দাঁতের ক্যাভিটি রিমুভ করে থাকে।
- ওতিরিক্ত কোষ বিভাজন নিয়ণত্রন করে ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
- রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিইয়ায় বিশেষ কার্যকর যয়তুন।
- যৌন উদ্দীপনা বৃদ্ধি ও প্রজনন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে।
- এর অলেইক এসিড হার্টের সুরক্ষার কাজ করে।
- এতে আছে প্রচুর পুষ্টিকর ও খনিজ উপাদান। যেমন—সোডিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস ও আয়োডিন। শরীরে দরকারি ভিটামিন ও অ্যামাইনো এসিড সরবরাহ করে। ফলে বলি রেখা বা ত্বকের ভাজ পড়ে না।
- ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, যাইতুন খেলে ডায়াবেটিস হবে না। ইউরোপ আমেরিকায় এমনকি আরব আমিরাতে এর ব্যাপক গুরুত্ত্ব রয়েছে। তিনি আরো বলেন মহিলাদের অনিয়মিত মসিক হলে যাইতুন সিদ্ধ পানি খেলে উপকার পাওয়া যায়।
যাইতুন কিভাবে খাবেন
তেল
গায়ে মাখতে পারেন, রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন। অর্থাৎ যেভাবে ইচ্ছা ইউজ করতে পারেন। কোস্ট কাঠিন্য রোগীদের জন্য দিনে ১ চামচ (1 spoon) জয়তুন তেল অনেক অনেক উপকারী।সাধারণত সন্তান হওয়ার পর মহিলাদের পেটে সাদা রঙের স্থায়ী দাগ পড়ে যায়। গর্ভধারণ করার পর থেকেই পেটে জয়তুন তেল (Olive Oil) মাখলে কোন জন্মদাগ পড়ে না।
ফল
কাঁচা, পাকা, আবার পাকা ফল দীর্ঘদিন সংরক্ষন করেও খাওয়া যায়।
মাত্রা/ডোজ
যেহেতু পবিত্র কোরানে ৭ স্থানে এসেছে, এই জন্য বিশেষজ্ঞগণ প্রতিদিন ৭ টি ফল খেলে সর্বোত্তম ফল পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন। আবার জাপানের একদল বিজ্ঞানিও রোজ ৭টি ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
আরো পড়ুন-
ত্বীন বা ডুমুর কেন এত গুরুত্ত্বপূর্ণ
জয়তুন ফল গাছ, জউতুন ফল আর জলপাই কি এক, জয়তুন ফলের বাংলা নাম, জয়তুন তেল কোথায় পাওয়া যায়, জয়তুন তেল চুলের যত্নে, তিন ফল ইংরেজি, তিন ফল খাওয়ার নিয়ম, তিন ফল গাছ, তিন ও জয়তুন ফল খাওয়ার নিয়ম, তিন ফল দাম, ত্বীন ফল চাষ, তিন ফল ছবি, জয়তুন ফলের উপকারিতা
Good to know
উত্তরমুছুনInform to know
উত্তরমুছুন